নেপাল ভ্রমণ (Nepal)
ফ্রি ভিসা এবং নেপাল ভ্রমণ নিয়ে কিছু প্রয়োজনীয় টিপসঃ
১। হিন্দি ভাষা জানা থাকলে খুব সুবিধা হবে নেপালিদের সাথে যোগাযোগ করতে। ওখানে প্রায় সবাই হিন্দিতে কথা বলেতে পারে।
২। নেপাল ভ্রমণ সিজন শুরু হয় অক্টোবর থেকে এবং চলে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত। তাই এসময় বেশী ভিড় থাকে। ভিড় এড়াতে চাইলে আগস্ট – সেপ্টেম্বর মাসের দিকে ভ্রমণ করুন।
৩। চেষ্টা করবেন কমপক্ষে ১ মাস আগে থেকে বুকিং দিতে।
৪। নেপাল যাবার সময় বিমানের ডান দিকে এবং ফেরার সময় বাম দিকে সিট নেয়ার চেষ্টা করবেন। সেক্ষেত্রে আকাশ পরিস্কার থাকলে বিমান থেকেই হিমালয় দেখতে পাবেন।
৫। নেপাল বিমানবন্দরে অবতরণের পর সার্ক ভুক্ত দেশের জন্য আলাদা ভিসা লাইন পাবেন। অন-আরাইভাল ভিসার জন্য সেই লাইনে দাড়িয়ে যাবেন।
৬। বছরে ১ বার নেপাল গেলে সেক্ষেত্রে কোন ভিসা ফি লাগবে না। দ্বিতীয়বার থেকে ফি প্রযোজ্য।
৭। ভিসার জন্য ১টি বোর্ডিং কার্ড এবং ১টি ভিসা ফর্ম পূরণ করতে হয়। এর সাথে ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগবে। বিমানে থাকাকালীন অবস্থায় এয়ারহোস্টেসরা আপনাকে এগুলো দিয়ে দিবে। এয়ারপোর্টে গেলে ওরাই আপনাকে ছবি লাগিয়ে দিবে।
৮। ভিসা দেবার সময় সাধারণত আপনাকে কোন প্রশ্ন করা হবে না। সর্বনিম্ন ৩০ দিনের ভিসা পেয়ে যাবেন অতি দ্রুত।৯। সাধারণত সীম কার্ড কেনা ছাড়া অন্য সময় ডকুমেন্টস লাগে না। তবে সমস্যা এড়াতে পাসপোর্ট ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্র, কয়েক পাসপোর্ট সাইজ ছবি, হোটেল বুকিং এর প্রিন্টেড কপি ইত্যাদি সাথে রাখুন।
আকাশ পথে নেপালঃ
১। ভিসাঃ
নেপালে বাই এয়ার গেলে অন এরাইভাল ভিসা পাবেন, অর্থাৎ কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টে একটা ফর্ম ফিলাপ করে ওরা আপনার পাসপোর্টে সিল মেরে দিবে। সার্ক (বাংলাদেশ) দেশ সমুহের নাগরিক দের জন্য বছরে প্রথমবার কোন ভিসা ফি লাগবে না, অর্থাৎ একই বছর দ্বিতীয়বার ভ্রমনের জন্য ভিসা ফি লাগবে।
২। কাঠমান্ডুর থামেল এলাকাটি টুরিস্টদের জন্য, থামেলের রাস্তার যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই হোটেল পাবেন, চিৎকাইত মার্কা থেকে ৩/৪ তারা সবই পাবেন। হোটেল বাংলাদেশের চেয়ে সস্তা। ৫০০-৬০০ রুপিতে তে মোটামোটি চলনসই রুম, আর ১০০০ রুপি তে ভালো বাথটাব সহ রুম পাবেন। কাঠমান্ডুতে বেশিরভাগ সময় বিদ্যূত থাকে না, দেখে নিবেন হোটেলে জেনারেটর সুবিধা আছে কিনা। চিপা গলির ভেতর ও ভালো হোটেল পাবেন সস্থায়।
৩। এয়ারপোর্ট থেকে থামেল ট্যাক্সি করে যাবেন, ভাড়া নির্ধারিত। আর কোন তাড়া না থাকলে ম্যাপ দেখে হেটে হেটে যাবেন, কিন্তু অনেক দুর।
৪। কেনাকাটাঃ
থামেল এ অসংখ্য আউটডোর গিয়ারের দোকান পাবেন, খুব সাবধান, ৯৯ ভাগ দোকানেও যেসব ব্রান্ডেড পন্য দেখবেন সবই নকল। আসল গিয়ার কিনতে হলে তাদের ব্রান্ড শোরুমে যাবেন, নর্থফেস, ডয়টার, ব্ল্যাক ডাইমন্ড ইত্যাদির বড় শোরুম আছে। ৪০০০-৬০০০ এ যেসব নর্থফেস, ডয়টার, মাউন্টেন হার্ডউয়ার, জ্যাক উল্ফস্কিন ব্যাকপ্যাক পাবেন তা চোখ বন্ধ করে নির্ধিধায় ধরে নিবেন নকল। চাইনিজ ভালো ব্যাকপ্যাক পাবেন খুজলে, যেমন এআই ওয়ান, ডে প্যাক পড়বে ৩০০০-৪০০০ রুপি, ব্যাকপ্যাক ৬০০০-৮০০০ রুপি।৫০০-৬০০ রুপিতে যেসব ট্রেকিং পোল পাবেন তাও রেপ্লিকা, মোটেও ক্যাম্প বা লেকি না। শোরুম ব্যাতিত জ্যাকেট, প্যান্ট সবই নকল, গোরটেক্স এর জ্যাকেট বা জুতা ৪০০০-৫০০০ রুপি মানেই নকল।নর্থফেসের শোরুমে ট্রেকিং বুট পাবেন, সর্বনিম্ন দাম ১১০০০ রুপি।সব দোকানে সবই (সো কলড) কাশ্মিরি শাল, কাজেই বুইঝা।
৫। খাওয়া দাওয়াঃ
খাওয়া ঢাকার থেকে সস্থা। অশংখ দোকান আছে। সবচেয়ে পেট ভরার জন্য লাভজনক খাওয়া নেপালে “থালি”থালি তে ডাল ভাত সবজি আর মাছ থাকবে, ডাল ভাত সবজি আনলিমিটেড একই দামে।থামেলে খাওয়া দাওয়ার জন্য ভাল জায়গা হোটেল আল-মদিনা। খাবার ভাল, দাম অনেক কম আর হালাল। নেপালে থাকে এমন বাংলাদেশীদের সাথেও দেখা হবে এই হোটেলে। ভিসার জন্য ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ফটো লাগে। এছাড়া ন্যাশনাল পার্ক/কনজারভেশন এরিয়া গুলাতে ট্রেকিং এ গেলে পারমিশন আর ট্রেকার ইনফো কার্ড নিতে হবে। এই জন্য ৪ কপি ফটো লাগে।
৬। ট্রান্সপোর্টঃ
আশে পাশে যেতে ট্যাক্সি। অথবা হেঁটে ঘুরতে পারেন। বাইসাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়।
৭। ফেরার সময় সব টাকা খরচ করে ফেলেন না, সাথে ৪০০ রুপি রাখবেন, এয়ারপোর্টে ডিপারচার ট্যাক্স দিতে হবে।
৮। দিনে ১০০০ টাকা থাকলে নেপালে আরামে থাকা খাওয়া সম্ভব, গ্রুপে গেলে আরো কমবে। অবশ্যই ১০০ ডলার বা ১৫০ ডলার পাসপোর্টের এনডোর্স করে নিয়ে যাবেন, নাহলে বাংলাদেশের এয়ারপোর্টে ভেজাল করতে পারে। বাংলাদেশি টাকা যেন যাওয়ার সময় ১০০০ এর বেশি না থাকে সাথে খেয়াল রাখবেন, নাহলে ঝামেলায় পড়বেন।
ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ
Comment (0)